অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি (Adrenal gland): দেহের স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াতে জড়িত দুটি গ্রন্থি। এই গ্রন্থিগুলি কিডনির উপরে অবস্থিত।
এন্ডোক্রাইন সিস্টেম (Endocrine system): দেহে হরমোনের পরিমাণ এবং টাইপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এমন অঙ্গ এবং গ্রন্থি
গ্রন্থি (গ্ল্যান্ড) (Gland): এমন একটি অঙ্গ যা দেহের নির্দিষ্ট স্থানে বা শরীরের বাইরের অংশে ব্যবহারের জন্য উপাদানগুলি তৈরী করে
নার্ভাস সিস্টেম (Nervous system): নিউরোন নামক বিশেষ কোষগুলির একটি নেটওয়ার্ক যা প্রাণীর ক্রিয়াকলাপকে সমন্বিত করে এবং দেহের বিভিন্ন অংশে এবং সংকেত পাঠায়।
ফোটোপিরিওডিজম (Photoperiodism): দিন - রাতের দৈর্ঘ্যের (ঋতু) পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রাণীর শরীরের নানা প্রক্রিয়ার ও তার ব্যবহারে যে পরিবর্তন আসে ।
বয়ঃসন্ধি (Puberty): শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্কে পরিবর্তন যখন শরীর সন্তান উৎপাদন করতে সক্ষম হয়।
হরমোন (Hormone): কোষ এবং গ্রন্থি দ্বারা পাঠানো একটি রাসায়নিক বার্তা যা দেহের অন্যান্য কোষকে প্রভাবিত করে।
হাইপোথ্যালামাস (Hypothalamus): মস্তিষ্কের এমন একটি অংশ যা হরমোন নিঃসরণ করে তৃষ্ণা, ক্ষুধা, শরীরের তাপমাত্রা এবং আরো অনেক ক্রিয়াকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে।
হোমিওস্টেসিস (Homeostasis): একটি সিস্টেম বা প্রক্রিয়া স্থিতিশীল অবস্থায় রাখার ক্ষমতা।
তোমার প্রিয় ঋতু কি ? এটি কি বসন্ত , যখন তুমি ভ্রমণে যেতে পারো এবং দিনগুলি আরও বড় হতে শুরু করে? গরমের তীব্রতা যখন শেষ হয় এবং পাতাগুলি নিজের বর্ণ পরিবর্তন করে তখন সম্ভবত সেটি পড়ে যায়। চারটি ঋতুতে (বসন্ত, গ্রীষ্ম, শরৎ এবং শীত) তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের পরিমাণের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেককিছুই পরিবর্তিত হয়। গাছপালা এবং প্রানিরাও ঋতুর সাথে বদলাতে থাকে।
বসন্তকালের উষ্ণ তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত গাছগুলি পুষ্পিত করতে এবং পতঙ্গদের উজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। উদ্ভিদ এবং পতঙ্গ বেশ কিছু বৃহৎ প্রাণীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উৎস , তাই উদ্ভিদ এবং পতঙ্গদের ক্রিয়াকলাপ যত বৃদ্ধি পায়, একই সাথে উদ্ভিদ এবং পতঙ্গভুক প্রাণীদের কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। এইসময় প্রচুর পরিমানে খাবার পাওয়া যায় ,প্রাণীগুলি পরজাপ্ত পরিমানে খাবার খেতে পারে এবং তাদের বাচ্চাদের(এদের শাবক বলা হয়) জন্য জথেস্ত পরিমানে খাওয়ার মজুত থাকে। এই কারণে যখনই উদ্ভিদ ও পতঙ্গের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে ঠিক তারপরে গ্রীষ্মের অনেক প্রাণী তাদের শিশুদের জন্ম দেয় ।
এর অর্থ হল মৌসুমি পরিবেশে বসবাসকারী প্রাণীগুলিকে ঋতুর সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখার জন্য তাদের আচরণগত পরিবর্তন করতে হয়। যদি কোনো পাখি গ্রীষ্মের সেশের দিকে তার সিশুর জন্ম দেয় তখন পর্যাপ্ত খাবার না পাওয়ার জন্য সেই শিশুটি শীতে বাঁচতে পারে না। এই ধরনের প্রাণীদের জন্য ঋতু সম্পর্কে ধারণা থাকাটা তাদের জীবন এবং মৃত্যুর বিষয় ।
প্রাণীরা কিভাবে বুঝতে পারে এটি কন ঋতু? তাদের কাছে কোনো দিনপঞ্জিকা বা বিদ্যালয়ের ছুটি নেই , তাই তাদের পরিবেশে এমন কিছুর সন্ধান করতে হবে যা তাদের বছরের সময় বলে দেবে। এটিকে পরিবেশগত সংকেত বলা হয়। পাখিরা দিনের দৈর্ঘ্যকে পরিবেশগত সংকেত হিসাবে ব্যবহার করে কারণ এটি সারা বছর ধরে খুব নিয়মিত ধারায় পরিবর্তিত হয়। বসন্তে দিনগুলি আরও বড় হতে শুরু করে এবং তারপরে শরৎকালে ছোটো হতে শুরু করে। এই কারণেই শীতের চেয়ে গ্রিস্মকালে দিনগুলি বড় হয় এবং তুমি সন্ধ্যে বেলায় খেলতে পারো।
সারাবছর দিনের দৈর্ঘ্যর পরিবর্তনের সঙ্গে কোনও প্রাণীর যদি কিছু পরিবর্তন হয় তখন তাকে আলোক পর্যায়বৃত্তিক বলা হয়। বিভিন্ন প্রকার প্রাণীরাই আলোক পর্যায়বৃত্তিক হয়। যেমন সাধারন স্থল শামুক যেগুলি বাড়ির উঠোন বা পার্কে দেখা যায়। বসন্তকালে যখন দিন বড় হতে থাকে এই ক্ষুদ্র শামুকগুলি দিম পারে। যেহেতু এরা দিনের দৈর্ঘ্যর ওপর নির্ভর করে ডিম পারে একে আমরা আলোক পর্যায়বৃত্তিক বলে থাকি।
সাধারণ স্থল শামুকের প্রজনন আলোক পর্যায়বৃত্তিক হলেও অন্যান্য অনেক কারণ এর প্রজননকে প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ যদি শামুকটি খুব অল্পবয়স্ক বা খুব ছোট হয় তাহলে দিনের দৈর্ঘ্য বাড়া সত্ত্বেও এটি ডিম পাড়তে পারবে না। যদি এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা বলতেই পারি যে তারা আলোক পর্যায়বৃত্তিক হলেও দিনের দৈর্ঘ্যর ক্ষেত্রে সংবেদনশীল নয়। এই ক্ষেত্রে দিনের দৈর্ঘ্যর ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়ার আগে তাদের একটি নির্দিষ্ট আকারে বৃদ্ধি পেতে হবে। তবে কিছু প্রাণীর এক বছরের মধ্যেই দিনের দৈর্ঘ্যর ব্যাপারে সংবেদনশীলতাকে পরিবর্তন করতে পারে।
এসো এখন আমরা পাখিদের ওপর একটু নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখি। বসন্তে যখন দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে শামুকের মতো পাখিরাও ডিম পাড়ে। এটি আদর্শ সময় কারণ বছরের এই সময় প্রচুর পরিমাণে খাবার পাওয়া যায়। এই সময়কালে পাখিগুলি দিনের দৈর্ঘ্যর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংবেদনশীল হয়।
তবে গ্রীষ্মকাল জুড়ে দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশ বাড়তে থাকে। যদি পাখিগুলি দিনের দৈর্ঘ্যর ক্ষেত্রে সংবেদনশীল থেকে যেত তবে তারা সারা গ্রীষ্ম জুড়ে ডিম পাড়ত এবং পাখির বাসা গুলি তাদের শাবক দ্বারা উচ্ছ্বসিত হতো। এর বদলে পাখিগুলি গ্রীষ্মকালে দিনের দৈর্ঘ্য পরিবর্তনের জন্য ধীরে ধীরে তাদের সংবেদনশীলতা হারাবে এবং এক সময় ডিম পাড়া বন্ধ করে দেবে।তারপর তারা তাদের পেড়ে রাখা ডিমগুলির যত্ন নেওয়ার জন্য তাদের সমস্ত সময় ব্যয় করতে পারে।
তাহলে কোনও প্রাণী কিভাবে তাদের সংবেদনশীলতাকে দিনের দৈর্ঘ্যর সাপেক্ষে পরিবর্তন করতে পারে? তাদের মস্তিষ্ক আলোক সাপেক্ষে কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেয় সেটি দেখে তারা পরিবর্তন করে।
রুফাস চড়ুই পাখি (Peucaea carpalis) একটি অস্বাভাবিক পাখি যে আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে পাখিগুলি কিভাবে আলোর প্রতি তাদের সংবেদনশীলতাকে পরিবর্তন করে। এই পাখি সোনারান মরুভুমিতে বসবাস করে। যেখানে বসন্তে গাছপালা প্রস্ফুটিত হয় না; গ্রীষ্মের শেষের দিকে এগুলি প্রস্ফুটিত হয় যখন বর্ষার বৃষ্টি মরুভুমিকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
যদি দিনের দৈর্ঘ্য বাড়তে শুরু করে রুফাস চড়ুই পাখি ডিম পাড়তে শুরু করে, তবে তার শাবকরা খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার থাকে না। তাই এই পাখি বর্ষার বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে ডিম পাড়ে। এই পাখি এইরকম করতে সক্ষম কারণ এরা মস্তিষ্কের আলোক প্রতিক্রিয়া পরিবর্তন করতে পারে। অন্যভাবে বলতে গেলে এরা দিনের দৈর্ঘ্যর ক্ষেত্রে সংবেদনশীলতাকে পরিবর্তন করতে পারে।
অন্যান্য পাখির মস্তিষ্কের তুলনায় রুফাস চড়ুই পাখির মস্তিষ্ক কিভাবে আলাদা তা জেনে কিভাবে প্রাণী তাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে তার অনেক কিছুই আমরা জানতে পারি। অ্যারিজনা স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর Pierre Deviche মনে করেন যে হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশের পরিবর্তনই এই পার্থক্যের কারণ।
হরমোনগুলি বেশিরভাগ প্রাণীর প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাখিরাও এর ব্যাতিক্রম নয়। তাদের শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় তারা ডিম পাড়ে। যদিও রুফাস চড়ুই পাখি তাদের শরীরে আলোক প্রতিক্রিয়ায় হরমোন উৎপন্ন হওয়ার পদ্ধতিকে পরিবর্তন করতে পারে। এর অর্থ হল প্রাণীরা কিভাবে দিনের দৈর্ঘ্যর ক্ষেত্রে সংবেদনশীল হয়ে ওঠে সেই সম্পর্কে এই মরুভুমির ছোট্ট পাখিটি গুরুত্ত্যপুরন প্রশ্নের জবাব দিতে পারে।
Alex Brashears. (2020, September 18). বৃষ্টির মধ্যে গান, (, Trans.). ASU - Ask A Biologist. Retrieved November 13, 2024 from https://askabiologist.asu.edu/bengali/brssttir-mdhye-gaan
Alex Brashears. " বৃষ্টির মধ্যে গান", Translated by . ASU - Ask A Biologist. 18 September, 2020. https://askabiologist.asu.edu/bengali/brssttir-mdhye-gaan
Alex Brashears. " বৃষ্টির মধ্যে গান", Trans. . ASU - Ask A Biologist. 18 Sep 2020. ASU - Ask A Biologist, Web. 13 Nov 2024. https://askabiologist.asu.edu/bengali/brssttir-mdhye-gaan
By volunteering, or simply sending us feedback on the site. Scientists, teachers, writers, illustrators, and translators are all important to the program. If you are interested in helping with the website we have a Volunteers page to get the process started.